With the goal of total liberation, the workers should not seize the state apparatus, but attack the state and destroy it.
Dans l’objectif d’une libération totale, les travailleurs ne doivent pas s’emparer de l’appareil d’État, mais l’attaquer et le détruire.
মার্ক্সবাদীরা বলে ক্ষমতা গ্রহণের পর রাষ্ট্রকে তারা নাকি ‘শুকিয়ে মেরে ফেলবে’।
অর্থাৎ বুর্জোয়া শ্রেণীর অবসানের পর রাষ্ট্র নাকি ক্রমশ তার শাসন করার ক্ষমতা হারিয়ে শুধুমাত্র এডমিনিস্ট্রেটিভ একটি অর্গানে পরিনত হয়ে যাবে, যার ফলস্বরূপ অবসান ঘটবে রাষ্টেরও৷ কয়েক মুহুর্ত সময় কাটিয়ে গভীর ভাবে ভাবলেই কিন্তু এই দাবীগুলোকে সম্পূর্ণ ভাবে পরাস্ত করা যায়।
একটু ভাবুনতো যখন ‘প্রলেতারীয় একনায়কতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠিত হবে, তখন কি আসলেই একটি দেশের প্রলেতারীয় শ্রেণী অর্থাৎ শ্রমিক শ্রেণীর প্রত্যেক সদস্য রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবে? এমন কি হবে না যে প্রলেতারীয় শ্রেণীর মধ্য থেকে খুব ছোট এক গোষ্ঠী সেই রাষ্ট্রের ক্ষমতা দখল করবে? তাহলে কি সেটা ‘প্রলেতারীয় একনায়কতন্ত্র’ হল নাকি ‘প্রলেতারীয় শ্রেণীর মধ্যকার খুব সংকীর্ণ এক দলের একনায়কতন্ত্র’ হল? আবার প্রশ্ন হল ওই ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর সদস্যই বা কারা? তারা কি প্রলেতারীয় শ্রেণীর সবচেয়ে সৎ মানুষগুলো? নাকি চতুর রাজনীতিবীদ যারা মঞ্চ কাপানো স্লোগান দিয়ে ইলেকশন জয় করার ক্ষমতা রাখে?সৎ মানুষগুলো কি আদৌ ক্ষমতার ধারে-কাছে যেতে পারবে? মোটেও না।
হয় ওই সৎ মানুষটাকেও ওই চতুর রাজনীতিবীদের মত মিথ্যা ওয়াদা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে – যার ফলে সে আর সৎ থাকবেই না – আর না হয় আর কজন ‘প্রজার’ মতই ওই রাজনীতিবিদের ক্ষমতার গোলাম হয়ে জীবন কাটাতে হবে।
তো এমন রাষ্ট্রযন্ত্রের হাতল এখন কুক্ষিগত হল সংখ্যালঘু রাজনীতিবীদদের হাতে। তারাই এখন সমাজের হুকুমকর্তা। তারাই উৎপাদনের উপাদানের মালিক। তারাই রাজা, আর সবাই প্রজা। তাদের হাতে সব ক্ষমতা, তাদের খুশিমত রাজ্যে.. থুক্কু ‘রিপাবলিকে’ সব কিছু হয়। ক্ষমতার সাইকোলজিকাল ইফেক্ট ব্যক্তির উপর কিরুপ প্রভাব ফেলে তা আশা করি বাঙালীকে বিশেষ করে বুঝানো লাগবে না, কেনন তারা এক্সপিরিয়েন্সের মাধ্যমে বেশ ভালো করেই জানে।
প্রথমত, ক্ষমতা একজন ব্যক্তিকে করে ‘ইনডিফরেন্ট’। অর্থাৎ তার ক্ষমতার ব্যবহারের ফলে তার সাবজেক্টের ক্ষতির অবস্থা সে বুঝতে চায় না। তাই সে তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ নাকচ করে দেয। তার বিরুদ্ধে সমালোচনা শুনতে চায় না। সে তখন যেটা করে তা হল তার ক্ষমতা দিয়েই ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা করে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ও সমালোচনা করাকে ‘শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষনা করে।
দ্বিতীয়ত, ক্ষমতা মানুষকে এমন অবাস্থায় আনে যে সে সব সময় ক্ষমতা হারানোর ভয়ে থাকে৷ তার সাধারণ সমালোচনাকেও সে দেখে বিদ্রোহ হিসেবে। রাস্তায় সামান্য এক মিছিলকেও দেখে বিপ্লব হিসেবে। অর্থাৎ সে হয়ে যায় প্যারানয়েড। এবার ভাবুন, তাহলে নতুন প্রলেতারীয় রাষ্ট্রেও কি শাসকের একই অবস্থা হবে না? তারা কি তাদের বিরুদ্ধে আনা যে কোন ধরনের আওয়াজকে বলপ্রয়োগ করে দমন করবে না? তারা কি তাদের হাতে থাকা বিশাল সৈন্যবাহিনী, পুলিশবাহিনী, আদালত, জেল, জল্লাদ ব্যবহার করতে এতটুকুও দ্বিধা বোধ করবে? না, করবে না।
তারা ধীরে- ধীরে তাদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য ‘আইন পাশ’ করিয়ে তাদের জনতার উপর ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করবে।শ্রমিকদের নিজস্ব সব সংগঠন ভেঙে শ্রমিকদের উপর নিজেদের করায়ত্ত বৃদ্ধি করবে। তারা বলবে এসব কিছু নাকি সমাজতন্ত্রের শত্রুদের থেকে দেশকে রক্ষা করার ব্যবস্থা। কিন্তু শ্রমিকেরা নিজেরাই কিভাবে শ্রমবাদের শত্রু এই প্রশ্ন জিগ্যেস করলে তারা আপনাকেও পাঠাবে জেলের জল্লাদের কাছে, আপনিও পরিচিত হবেন ‘এনিমি অব দ্যা স্টেট’ নামে।
এভাবেই ক্রমশ ওই শাসকগোষ্ঠী নিজেরা পরিণত হবে এক সুবিধাবাদী শ্রেণী হিসেবে। তারা হবে সমাজের সুবিধাবাদী আমলা শ্রেণী। সাম্যবাদের নামে তারা তৈরি করবে সমাজে সবচেয়ে বড় বৈষম্য ও অনাচার। এখন প্রশ্ন হল কীভাবে এই অন্যায়ী শাসক শ্রেণী নিজেকেই নিজে বিলোপের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে ‘শুকিয়ে মারবে?’ এইটা ভাবা ও পুঁজপতি শ্রেনী একসময়ে সমাজের সকল উৎপাদনের উপাদান শ্রমিকদের দান করে নিজেই নিজের বিলোপ সাধন করবেঃ এইটা ভাবা একই কথা।
রাষ্ট্র কখনই নিজে মরবে না। সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে শ্রমিকদের রাষ্ট্রযন্ত্র দখল নয়, রাষ্ট্রের উপর হামলা করে তার বিলোপ ঘটাতে হবে। প্রত্যেক কমিউনের স্বাধীনতা দাবী করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফেডেরেট করে অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা মূলক কর্মসম্পাদন করতে হবে। প্রত্যেক ফ্যক্টরি ও খামারে শ্রমিক পরিষদ গঠন করে শ্রমিকদের স্বব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদনমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে হবে। প্রতেক কমিউনের প্রত্যেক মহল্লা থেকে পণ্য বিপনন কমিটি গঠন ও তাদের শ্রমিক পরিষদগুলোর সাথে ফেডেরেশনের মাধ্যমে ব্যক্তি প্রয়োজন মোতাবেক পণ্য বিপননের ব্যবস্থা করতে হবে।
পূঁজিবাদ, আমলাবাদ – মূর্দাবাদ
সমাজবাদ, অরাজবাদ – জিন্দাবাদ।
সংগঠন এবং এনার্কিজম বা নিরাজবাদ
Organization and Anarchism
যারা কর্তৃত্ববাদি দল করেন বা দল থেকে আসেন তাঁদের এটা ভাবতেই কষ্ট হয় যে ‘কোন রকম’ সরকার ছাড়া চলবে কেমন করে ! তাঁরা তখনই চিন্তা করতে থাকে থাকেন আর সিদ্বান্ত নিয়ে বসেন, ‘নিরাজবাদ বা এনার্কিজম কোন সংগঠনে বিশ্বাসী নয়’। কিন্তু সরকার মানেই হল কিছু লোক, আর সংগঠন হল একটি বিষয়। এক ধরনের বিশ্বাস প্রচলিত আছে যে, বিরোধীরা ‘ নিজেদের সংস্থা গড়তে না পেরে অন্যদের সংগঠন ভেঙ্গে ফেলা হয়’, এই ধরনের চিন্তা ধারা প্রায়স বিপদজনক হয়ে উঠে, দলের চেয়ে পদসোপানের গুরুত্ব প্রবল হয়ে উঠে, ফলে মানুষের ব্যাক্তিগত স্বাধীনতাকে হত্যা করা হয়।
সংগঠন এবং এনার্কিজম বা নিরাজবাদ
এ কে এম শিহাব
যারা কর্তৃত্ববাদি দল করেন বা দল থেকে আসেন তাঁদের এটা ভাবতেই কষ্ট হয় যে ‘কোন রকম’ সরকার ছাড়া চলবে কেমন করে ! তাঁরা তখনই চিন্তা করতে থাকে থাকেন আর সিদ্বান্ত নিয়ে বসেন, ‘নিরাজবাদ বা এনার্কিজম কোন সংগঠনে বিশ্বাসী নয়’। কিন্তু সরকার মানেই হল কিছু লোক, আর সংগঠন হল একটি বিষয়। এক ধরনের বিশ্বাস প্রচলিত আছে যে, বিরোধীরা ‘ নিজেদের সংস্থা গড়তে না পেরে অন্যদের সংগঠন ভেঙ্গে ফেলা হয়’, এই ধরনের চিন্তা ধারা প্রায়স বিপদজনক হয়ে উঠে, দলের চেয়ে পদসোপানের গুরুত্ব প্রবল হয়ে উঠে, ফলে মানুষের ব্যাক্তিগত স্বাধীনতাকে হত্যা করা হয়।
এটা স্বীকার না করার কোন উপায় নেই যে, উপযুক্ত স্থানে উপযুক্ত মানুষের সমাহার না হলে সত্যিকার নিরাজবাদি সংস্থা গড়ে তুলা যায় না, দুনিয়ার নানা স্থানে হয়ত গণতান্ত্রিক কিছু সংগঠন গড়ে উঠেছে আবার স্বৈরতান্ত্রিক সংস্থার ও জন্ম হয়েছে, এই গুলো আবার পদসোপানদারী বা উদারনৈতিক সংস্থা হতে পারে – তবে তা নিরাজবাদি নয়, এটা প্রমানিত যে সংগঠন হবে অবশ্যই নিচে থেকে উপরের দিকে চালিত সংগঠন। তার অন্যতা হবে না । কেন্দ্র থেকে দলীয় প্যাডে কমিটি তৈরী করে পাঠিয়ে দিলে তা হবে হাস্যকর।
অনেক ট্রেড ইউনিয়ন আছে, বিশেষ করে যারা পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সাথে মিশে সুশৃংখল ভাবে কার্যক্রম চালায়, তাঁদের মাঝে ও পদসোপানের চর্চা বিদ্যমান; কিন্তু দেখতে হবে তাঁরা কত সংখ্যক শ্রমিককে সুশৃংখল করে রাখতে পেরেছেন ? তাঁরা যদি তালিকা ভুক্ত হয়ে থাকেন তবে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে ই হবে। নইলে তালিকা থেকে নাম কাঠিয়ে বা বাতিল করে বেড়িয়ে আসতে হবে। তাঁদেরকে অবশ্যই স্বাধীনভাবে আসতে দিতে হবে, সকল হুমকি ধমকির বিলয় ঘটাতেই হবে। যখন ফ্যাসিবাদের প্রভাব বেড়ে যায় তখন শ্রমিকের মর্যাদা নিচে নেমে আসে, সেই পরিস্থিতিতে মালিক পক্ষের স্বাধীনতা ও স্বার্থ বৃদ্বি পায় এবং বহাল থাকে। নাজিবাদ কেবল অল্প সংখ্যক পুজিপতির স্বাধীনতা ও স্বার্থ সীমিত আকারে বজায় রেখে শ্রমিকদের আশা আকাংখাকে গুড়িয়ে দিয়েছিল। কেবল মাত্র পরিবর্তনকামী ইউনিয়ন সমূহই শিক্ষা নিয়েছে কি ভাবে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রন হ্রাস করে সত্যিকার গমানুষের আন্দোলন সংগ্রাম বহাল রাখতে পারে, তা হোক আনুস্টানিক বা অনানুস্টানিক প্রক্রিয়ায়, সেই সকল ক্ষেত্রে প্রায় সকল সিদ্বান্তই গ্রহন করা হয়েছে মাঠে ময়দানে বা তৃনমূল পর্যায়ে।